ঠিক কত সিজিপিএ হলে জার্মানিতে আপনি পড়াশোনা করতে পারবেন এ নিয়ে জল্পনাকল্পনার শেষ নেই, অনেকেই অনেকের অভিজ্ঞতা থেকে মতামত দেন কিন্তু প্রকৃতপক্ষে পুরো জার্মানির সকল ভার্সিটির এডমিশন প্রক্রিয়া একত্রে বিবেচনা করার কোন সুযোগ নেই এমনকি একই ভার্সিটির বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের ভর্তি প্রক্রিয়া আলাদা আলাদা হওয়া খুবই স্বাভাবিক । উদাহরণস্বরূপ বলা যায় TU Berlin- MSc Computer Science এর কথা, এ ভার্সিটিতে প্রতিবারই নির্দিষ্ট আসনের বিপরীতে বিভিন্ন দেশ থেকে অনেক বেশি শিক্ষার্থী আবেদন করেন, কিন্তু মজার ব্যাপার হলো মাত্র ৮ ভাগ আবেদনকারীর সাথে Entry requirements এর মিল খুঁজে পাওয়া যায় আর মাত্র ৫ ভাগ আবেদনকারীর ব্যাচেলর সেই রিকোয়ারমেন্ট পূরণ করতে পারে আর সবাই এডমিশন পায়। এক্ষেত্রে আপনার সিজিপিএ ৩.৯৪ হলেও খুব একটা প্রভাব পড়বে না।
আবার TU Ingolstadt এ এক বাংলাদেশী ভাই ২.৮৪ নিয়ে পড়াশোনা করছেন অথচ গত উইন্টারে আমার পরিচিত এক ভাই ৩.৭০+ সিজিপিএ নিয়েও সেখানে এডমিশন পায়নি। তবে অনেক এপ্লিকেশন যখন বিষয়ভিত্তিক শর্তগুলো পূর্ণ করতে পারে তখন বেশি সিজিপিএ অবশ্যই আপনাকে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে রাখবে।
এই ধরনের বিষয়ভিত্তিক রিকোয়ারমেন্ট রয়েছে এমন ভার্সিটির তালিকা অনেক লম্বা তবে শুধুমাত্র CGPA & Ielts এর উপর ভিত্তি করে ভর্তির সুযোগ দেয়া ভার্সিটি ও অনেক আবার একই ভার্সিটির ফ্যাকাল্টি ভেদে ভর্তি প্রক্রিয়ায় আপনি দুটো নিয়মই পেতে পারেন। আবার এর বাহিরেও ভর্তি প্রক্রিয়ায় ব্যতিক্রম দেখা যায় যেমন কিছু ভার্সিটিতে আন্তজার্তিক বিষয়গুলোতে তারা চেস্টা করে বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের সুযোগ দিতে, সেক্ষেত্রে আবেদনকারীর যোগ্যতা অনেক বেশি হলেও একটি নির্দিষ্ট কোটার বেশি তারা এক দেশ থেকে নিবে না যেটা হয়েছিলো আমার সময় ,২০১৮ উইন্টার সেশনে আমার ফ্যাকাল্টিতে মোট ১৮ দেশের ৩০ জন শিক্ষার্থী সুযোগ পেয়েছিলো, বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা থেকে ১ জন বা সর্বোচ্চ ২ জন করে।
অধিকাংশ ভার্সিটিতেই বিভিন্ন বিষয়ের নূন্যতম সিজিপিএ কত তা উল্লেখ করা থাকে, সেক্ষেত্রে Uni-assist দিয়ে আবেদন করলে আপনার আবেদনপত্র ভার্সিটিতে তারা পাঠাবেই না আবার সরাসরি আবেদনে ভার্সিটিতেও প্রাথমিক বাছাইপর্বে হয়তো আপনার আবেদন বাদ পড়ে যেতে পারে তবে এ ব্যাপারে নিশ্চিতভাবে কেউ বলতে পারবে না, তাই সরাসরি আবেদন করা যায় (এক্ষেত্রে নূন্যতম সিজিপিএ উল্লেখ থাকুক বা না থাকুক) এসকল ভার্সিটিতে আপনার অতিরিক্ত সকল অর্জন সহ আবেদন করা উচিৎ যেমন

১) ভালো মোটিভেশন লেটার ২)রিসার্চ পেপার / পাবলিকেশন্স ৩)চাকুরী অভিজ্ঞতা সনদ ( যাই হোক) ৪)বিভিন্ন সংস্থায় কাজের সনদ ৫)অনলাইন কোর্সের সনদ ৬) বিভিন্ন সেমিনার / প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ স্মারক ৭) লেটার অব রিকমেন্ডশন ৮) জার্মান ভাষার সার্টিফিকেট ৯) GRE/ GMAT Test Scores ইত্যাদি ভর্তির প্রতিযোগিতায় বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে। এবার আসি বাংলাদেশ থেকে ৩ এর নিচে সিজিপিএ নিয়ে ( CGPA 2.50 - CGPA 3.00) দিয়ে এডমিশন পেয়েছেন এমন ভার্সিটি সমূহের তালিকা, এসকল ভার্সিটিতে কম সিজিপিএ নিয়ে যারা অধ্যয়ন করছেন তাদের নাম ও ডিপার্টমেন্ট জানা সত্তেও প্রাইভেসি রক্ষায় উল্লেখ করছি না।
Justus-Liebig-Universität Gießen
University of Passau
Technische Universität Chemnitz (TU Chemnitz)
Anhalt University of Applied Sciences
Otto-Friedrich-University Bamberg
Technical University of Ingolstadt
University of Kassel
BTU Cottbus
Otto von Guericke University Magdeburg
Bielefeld University
University of Hohenheim
Stralsund University of Applied Sciences
Martin Luther University Halle Wittenberg
Ostbeyerische Technische Hochschule Regensburg
Eberswalde University of Sustainable Development
Mannheim university of applied sciences
Fulda University of Applied sciences
Hochschule Offenbach
Leibniz Universität Hannover
Leuphana univeristy Lueneberg
Hochschule Trier
University Oldenburg
TU Freiberg
University of Leipzig
Hof University of Applied Sciences
উপরোক্ত ভার্সিটিগুলোর তালিকা শুধুমাত্র যারা সিজিপিএ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তাদের উদ্দেশ্যে প্রকাশ করা, সবগুলো ভার্সিটিই পাবলিক ভার্সিটি এবং পড়াশোনার মান নিয়েও কোন সন্দেহ নেই। © উপরোক্ত লেখায় ভূল-ত্রুটি অনিচ্ছাকৃত, যে কোন ভূল, মতামত বা প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন।
লেখকঃ Nazmul Hasan Bappy MA in International Business and Economics University of Applied Sciences Schmalkalden এই লেখা পড়ার পরে কোন প্রশ্ন থাকলে বা মতামত দিতে চাইলে অথবা কাউকে ট্যাগ করতে চাইলে আমাদের ফেইসবুক গ্রুপের মাধ্যমে দিতে পারেন।