
গত ১৪ জানুয়ারি আমি Kassel থেকে jena যাই, ic ট্রেনে করে। জানালার পাশে বসে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে দেখতে কোন ফাঁকে পকেট থেকে মানিব্যাগ পড়ে যায়, খেয়াল ছিলো না। ট্রেন থেকে নামার ২/৩ ঘন্টা পরে মাথায় আসে, মানিব্যাগ ট্রেনে ফেলে এসেছি। ক্যাশ টাকা তেমন ছিলো না, তবে দরকারী কার্ড গুলো, ইউনিভার্সিটির আইডি,ব্যাংকের ডেবিট কার্ড, আর কিছু দরকারী কাগজ। ভাবতেসিলাম ব্যাংকে ফোন করে, কার্ড হারানোর কথা জানাবো। সন্ধ্যার পর নাস্তা করতে ম্যাকডোনাল্ডস এ যাই, ভাইয়াদের সাথে, কথা বলতে বলতে হুট করে ফেসবুকে একটা আননোন আইডি থেকে ম্যাসেজ রিকোয়েস্ট। জার্মানি তে আসার পরে এত এত আননোন ম্যাসেজ রিকোয়েস্ট পাইসি, ভাবতেসিলাম, এই টেনশনের মধ্যে অপরিচিত কারো সাথে কথা বলার সময় নাই। বাসায় গিয়ে পরে দেখবো। তবে নাম টা একটু অন্যরকম তাই কৌতুহলী হয়ে ম্যাসেজে ঢুকি, দেখলাম জার্মান ভাষায় বিস্তারিত কিছু একটা লেখা। তখন একদম নতুন নতুন ভাষা শিখতেসি, তাই সাথে সাথে ট্রান্সলেটরে ট্রান্সলেট করলাম। ম্যাসেজ টা ট্রান্সলেট করে,আমার চোখ কপালে উঠার মত অবস্থা। ভদ্রলোক আমার মানিব্যাগটা ট্রেনে পাইসেন, এখন চেক করে দেখলেন, আমি University of kassel এ পড়ি আর নাম, ছবি দেখে, ভাবলেন ইন্ডিয়ান বা বাংলাদেশী হব, আর একটা ডকুমেন্টস এ আমার ঠিকানা পেলেন, তো যেহেতু আমরা এশিয়ান রা ফেসবুকে বেশি থাকি, তাই উনি বুদ্ধি করে, আমার নাম সার্চ করলেন ফেসবুকে, আর আমার আইডিতে University of kassel লিখা দেখে, আর প্রোফাইল পিকচার দেখে মোটামুটি সিউর হয়ে আমাকে ম্যাসেজ দেন। আমি উনাকে রিপ্লাই করি, আর আমার টেনশনের ব্যাপারটা জানাই,উনার সাথে আমার ফোন নাম্বার আদান প্রদান হয়, এবং আমাকে Erfurt যেতে বলেন পরের দিন সকালে। Erfurt থেকে, jena বেশি দূরে না, তাই আমি পরের দিন সকালে Erfurt যাই। উনি আমার সাথে পরের দিন সকালে Erfurt দেখা করেন, আর আমার মানিব্যাগ হস্তান্তরিত করেন।আমি মানিব্যাগ পাওয়ার পর, ভিতরের কিছু চেক করার প্রয়োজনবোধ করি নি।
আমার সাথে তার বেশকিছুক্ষন গল্পগুজব চলে।সে নিজেও আনন্দিত আমাকে আমার জিনিস ফেরত দিতে পেরে। আমি ধন্যবাদ জানানোর পরে আমাকে পরবর্তীতে দেখেশুনে চলার পরামর্শ দেন। চলে আসার আগে তার সাথে ছবি তোলার অনুরোধ করি, এবং উনি বেশ স্বাচ্ছন্দ্যের সাথে সম্মতি জানান, আর ছবি তোলার পর আমি তা সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করার অনুমতি চাই, উনি অনুমতিও দেন, তবে কোথাও উনাকে বা উনার নাম ম্যানশন করতে মানা করেন। আসলেই, জার্মানদের আন্তরিকতার প্রশংসা করতেই হয়।

লিখেছেন Pijush Kuri